ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে। ভোট গ্রহণ হবে ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে, এবং প্রার্থীরা ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রচার চালাতে পারবেন। ছাত্রী হলগুলোতে প্রচারণার সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নির্ধারিত। প্রচারণায় কঠোর আচরণবিধি মানতে হবে, যার মধ্যে সাদাকালো পোস্টার ব্যবহার এবং কোনো ধরনের উপঢৌকন বা আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়া নিষিদ্ধ।
প্রচার কৌশল নিয়ে প্রার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার এবং সশরীরে হল ও একাডেমিক ভবনের সামনে প্রচারের পরিকল্পনা করছেন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর তারা ক্যাম্পাস ও হলগুলোতে প্রচার শুরু করবেন। গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ–সমর্থিত বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদার জানান, তিনি আচরণবিধি মেনে প্রচার চালাবেন। স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা উদ্ভাবনী পদ্ধতিতে প্রচারের পরিকল্পনা করছেন। প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেলের এজিএস প্রার্থী জাবির আহমেদ জুবেল জানান, তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর মাধ্যমে প্রচার শুরু করবেন।
আচরণবিধি অনুযায়ী, প্রার্থীরা শুধু সাদাকালো পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ব্যবহার করতে পারবেন, যেখানে অন্য কারও ছবি বা প্রতীক ব্যবহার নিষিদ্ধ। ক্যাম্পাস বা হলের কোনো স্থাপনা, দেয়াল, যানবাহন, গাছপালা, বা খুঁটিতে পোস্টার লাগানো যাবে না। ফটক, তোরণ, ক্যাম্প, বা আলোকসজ্জা নিষিদ্ধ, তবে অস্থায়ী প্যান্ডেল বা শামিয়ানা স্থাপনের অনুমতি রয়েছে। ধর্মীয় উপাসনালয়, শ্রেণিকক্ষ, পাঠকক্ষ, বা পরীক্ষার হলে প্রচার চালানো যাবে না। প্রার্থীরা উপঢৌকন বা বকশিস দিতে পারবেন না, এবং আক্রমণাত্মক বা উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া নিষিদ্ধ। সভা বা শোভাযাত্রার জন্য ২৪ ঘণ্টা আগে রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি নিতে হবে। প্রতি হলে একটি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনটি প্রজেকশন মিটিং করা যাবে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের শাস্তি হিসেবে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, প্রার্থিতা বাতিল, বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হতে পারে।
গতকাল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে ২১ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। ৩৪ জনের বাতিল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল কমিটি জুলিয়াস সিজার তালুকদার ও বায়েজিদ বোস্তামীকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ভোটার ও প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে। জুলিয়াস সিজার অভিযোগ অস্বীকার করে ন্যায়বিচারের আবেদন জানিয়েছেন।
চূড়ান্ত ভোটার তালিকা সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ করা হলেও হল ও দপ্তরগুলোর জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। ছবি প্রদর্শন না করতে চাওয়া ভোটারদের বুধবারের মধ্যে আবেদন করতে বলা হয়েছে। গতকাল উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সভায় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সভায় প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ, ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী, সিটি এসবির ডিআইজি মীর আশরাফ আলী, রমনা জোনের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম, ও শাহবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ খালিদ মুনসুর উপস্থিত ছিলেন।